দিদার হোসাইন,স্টাফ রিপোর্টারঃ চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ১৭ দিন পর মাটি চাপা অবস্থায় ১ বন্যহাতির মৃতদেহের সন্ধান পাওয়া গেছে।ঘটনাটি ঘটেছে বাঁশখালী উপজেলার পুঁইছড়ি ইউনিয়নের জঙ্গল পুঁইছড়ি পাহাড়ি অঞ্চলে।
আরো পড়ুন- আনোয়ারায় বন্যহাতির তান্ডবে বসতবাড়ি ভাংচুর
আরো পড়ুন-চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচনে বাঁশখালী আসনে সদস্য পদে মনোনয়ন দাখিল করলেন কল্যাণ বড়ুয়া
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে,পুঁইছড়ি ইউপিস্থ জঙ্গল পুঁইছড়ি পাহাড়ি অঞ্চলের বান্দরমারা এলাকায় মাটি চাপা অবস্থায় ১টি বন্যহাতির মৃতদেহের সন্ধান পাওয়া গেছে।বাঁশখালীতে একের পর এক বন্যহাতি হত্যা করা হলেও বন বিভাগ রেইঞ্জার কর্মকর্তাদের অবহেলায় বাঁশখালীতে বন্য হাতি হত্যাকাণ্ড রোধ হচ্ছে না।হাতি শূন্যের দ্বারপ্রান্তে বাঁশখালীর পাহাড়ি অঞ্চল।
আরো পড়ুন- জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রত্যাশিত প্রতিকে আনন্দিত সংগ্রাম
দৈনিক আজকের বিজনেস বাংলাদেশ-এ যুক্ত হলো চট্টগ্রাম বিভাগের একঝাঁক মেধাবী সংবাদকর্মী
সচেতন মহলের দাবি,বাঁশখালীতে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট চক্র সদস্যরা বন কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজশে রাতের আঁধারে দামি দামী গর্জন, সেগুন সহ বিভিন্ন জাতের গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে।বিভিন্ন করাত কলে তারা ওইসব গাছ গুলো নিয়ে স্তুপ করতে দেখা যায়।আবার অনেক সময় বড় বড় ট্রাকে করে বিভিন্ন জায়গায় সাপ্লাই করতেও দেখা গেছে।তাছাড়া রাতদিন পাহাড় থেকে মাটি কেটে বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে কোটি টাকা অবৈধ ভাবে উপার্জন করে যাচ্ছে সিন্ডিকেট সদস্যরা।পাহাড় সমতল করে স্থাপনা নির্মাণের মাধ্যমে অবৈধ দখলও করে নিচ্ছে সরকারি পাহাড়ি অঞ্চল।এতে পরিবেশও পৌঁছে যাচ্ছে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।আর ওই সিন্ডিকেট চক্রের সাথে আঁতাত করে নীরবে লাখ লাখ টাকা ইনকাম করে যাচ্ছে বন-কর্মকর্তারাও ।
পাহাড়ি এলাকায় সিন্ডিকেট চক্রের আগ্রাসনের ফলে পাহাড়ি বনাঞ্চল ছেড়ে ইদানীং লোকালয়ে ঢুকে পড়ে বন্যহাতি গুলো।পাহাড় ও বন খেকোদের চলাচল পথ সুগম ও নিরাপদ করতে প্রতিনিয়ত বন্যহাতি হত্যা করে যাচ্ছে দুষ্কৃতকারীরা এমন দাবি সচেতন মহলের।
এসময় স্থানীয়রা আরো বলেন,বন্যহাতি গুলোর মৃত্যু যদি স্বাভাবিক ভাবে হয় তাহলে মৃতদেহ গুলো মাটি চাপা হয় কিভাবে?আর এতো গুলো হাতি হত্যা করার পরেও বন বিভাগ দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না কেন?বন্যহাতি কারা হত্যা করছে,বনাঞ্চল থেকে গাছ নিধন করে পরিবেশকে ধ্বংসের মূখে কারা ঠেলে দিচ্ছে?তা খতিয়ে দেখার জন্যে সরকার ও প্রশাসনের কাছে দাবি জানান স্থানীয়রা।
এব্যাপারে বাঁশখালী উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আরিফ উদ্দিন এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান,২৬ সেপ্টেম্বর(সোমবার)দুপুরে পুঁইছড়ির জঙ্গল পুঁইছড়ি পাহাড়ি এলাকায় মাটি চাপা অবস্থায় একটি বন্যহাতির সন্ধান পাওয়া গেছে বলে রেইঞ্জার সুত্রে জানতে পেরেছি।সেখানে গিয়ে দেখা যায় যে,হাতিটির মৃতদেহের দুর্গন্ধ ছড়িয়েছে।প্রচুর পরিমাণে পোকার সৃষ্টি হয়েছে হাতির মৃতদেহে।হাতিটি ১০/১১ দিন আগে মারা গেছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
ময়নাতদন্তের জন্যে পাঠানো হয়েছে।
এইব্যাপারে বাঁশখালী উপজেলা বন বিভাগ (রেইঞ্জার) কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান শেখ এর সাথে যোগাযোগের একাধিক বার চেষ্টা করলেও মোবাইলে সংযোগ পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য,বিগত ২০১৪ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত বাঁশখালীতে আট বছরে ১৯ টি বন্যহাতি হত্যা করা হয়। এর মধ্যে ১২ টি হাতি কালীপুর রেঞ্জের আওতায়, ৭টি হাতি জলদি ও পুঁইছড়ি পাহাড়ি অঞ্চলে।বৈদ্যুতিক শক,বিষপান ও ফাঁদ বসিয়ে হাতি হত্যা করা হলেও এই হাতি হত্যাকাণ্ডের সঠিক কোন তদন্ত উঠে আসেনি।এমনকি কে বা কারা এই বন্যহাতি গুলো হত্যা করে যাচ্ছে?অদ্যবদি পর্যন্ত কাউকে চিহ্নিতও করা হয়নি।
Leave a Reply