1. admin@dainiksabujbangla.com : admin :
বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০১:৫১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বাঁশখালী চেচুরিয়া বায়তুল ফালাহ জামে মসজিদ ও ফোরকানিয়া মাদ্রাসার বার্ষিক সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হবে গুনাগরী সেভেন স্টার স্পোর্টিং ক্লাব ফুটবল টুর্নামেন্ট ফাইনাল খেলায় মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী পরিষদ ফুটবল একাদশের জয় বাঁশখালীতে বিদেশি পিস্তলের ৪৭ রাউন্ড গুলিসহ এক যুবক গ্রেফতার বাঁশখালীতে সেবার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে অনিয়ম, দূর্ণীতি ও হয়রানি প্রতিরোধে নির্বাহী কর্মকর্তাকে স্মারকলিপি পৌর বিএনপির আহ্বায়ক রাসেল ইকবাল মিয়া বাঁশখালী আদর্শ উচ্চ বিঃ এডহক কমিটির সভাপিত মনোনীত বাঁশখালীর বৈলছড়ী বিএনপি’র আহ্বায়ক ফজলুল কাদের এবং সদস্য সচিব আবুল কালাম বাঁশখালীতে ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ ও অপপ্রচারের প্রতিবাদ কন কনে শীতে অযত্নে -অবহেলায় কাটছে পথশিশুদের জীবন বাঁশখালীতে ডজন মামলার পরোয়ানাভুক্ত এক পলাতক আসামী পুলিশে গ্রেফতার বাঁশখালীতে তারুণ্যের উৎসব ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট ফাইনাল অনুষ্ঠিত

বেড়িবাঁধ অরক্ষিত!সর্বস্ব হারিয়ে কৃষকের কান্না! অ-বাজিই ক্যান গরি পুঁইজ্যোম হজ্যো টেয়া?  “ঋণে জর্জরিত কৃষক পরিবারের থামছেনা কান্না”

  • আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ১ নভেম্বর, ২০২২
  • ৯২ বার পঠিত

 

দিদার হোসাইন,স্টাফ রিপোর্টারঃ
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপকূলে বেড়িবাঁধ অরক্ষিত থাকার ফলে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাব ও জোয়ারের লোনাপানিতে জ্বলছে গেছে উপকূলের কৃষক পরিবারের “সোনার ফসল।এতে টমেটো চাষ,ধান, চিংড়ি ঘের,পুকুর ও মৎস্য প্রজেক্ট ধ্বংস হয়ে সর্বস্ব হারিয়ে ফেলেছে ঋণগ্রস্ত কৃষকেরা।

বাঁশখালীর উপকূলীয় অঞ্চলের গণ্ডামারা, বড়ঘোনা, সরল,চাম্বল, শীলকূপ,শেখেরখীল, ছনুয়া, পুঁইছড়ি, রত্নপুর, কদমরসুল,কাথরিয়া,বাহারছড়া,হালিয়াপাড়া, খানখানাবাদ,প্রেমাশিয়া,পুকুরিয়া সহ ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন এলাকায় টানা তিনদিন ঘুরে দেখা গেছে শত শত হেক্টর ধান লোনাপানিতে জ্বলছে সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে।এছাড়াও আগাম টমেটোসহ শীতকালীন বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ”সোনার ফসল”বেড়িবাঁধের ২৫/৩০টি পয়েন্ট দিয়ে জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়াতে ধ্বংস হয়ে গেছে।এতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিভিন্ন ব্যাংক, সংস্থা থেকে ঋণ ও স্থানীয় ধারদেনায় জর্জরিত অসহায় কৃষি পরিবার গুলো।

পরিদর্শন কালে গণ্ডামারা ইউপির ৩ নং ওয়ার্ডের নুরুল কাদের,আজম উদ্দিন,নুর মোহাম্মদ,আব্দুর রহিম,আব্দুল গফুর,রহিম, মোজাম্মেল,জসিম উদ্দিন,মোহাম্মদ হোসেন, সেকান্দর,রশিদ আহমদ প্রঃ রশু, মাওলানা ছিদ্দিক,মোঃ ইলিয়াস,মুবিন ও ২নং ওয়ার্ডের মোঃ আলমগীর,মোঃ সৈয়দ,১নং ওয়ার্ডের বজল আহমদ,মোঃ হাসান,আবু তাহের এবং সরল ইউপির ২নং ওয়ার্ডের মোঃ সেলিম উল্লাহ, জাকারিয়া, নাছির উদ্দিন মানিক,গিয়াস উদ্দিন, নুরুল ইসলাম মিয়া,মোঃ হোসাইন,আব্দুর রশিদ, ফোরকান, আবুল হাশেম,নুরুল আমিন,মোঃ হাসান,মোর্শেদ, নুরুচ্ছফা, আলমগীর,নুরুল আবছার,আব্দুর রশিদ, নুরুল ইসলাম,মামুন, মোস্তাকিম,মহিউদ্দিন,নেজাম উদ্দিন, আজগর হোসেন,জাকের,আসহাব মিয়া,নেজাম, মনসুর, আব্দুল কাদের,মোঃ শরীফ, আখতার হোসেন, আব্দুল হালিম,বেলাল, হাসমত উল্লাহ,নুরুল ইসলাম,আব্দুল হাকিম,মোঃ হোসেন, হাসান মুরাদ,আব্দুল হাসান ও মোঃছাবের সহ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার।”কান্না থামানো যাচ্ছেনা”ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদেরর।
তাঁরা অধিক লাভের আশায় বিগত কযেক বছর ধরে টমেটো সহ বিভিন্ন সবজি চাষ করে থাকেন।আর সবজি চাষ উপযোগী জমি গুলো কানি প্রতি বাৎসরিক লাগিয়ত হিসেবে জমি মালিকদের কাছ থেকে থাকেন কৃষকরা।জমি গুলো কানি প্রতি বাৎসরিক লাগিয়ত বহন করতে হয় ২০ হাজার টাকা।এছাড়াও ধান চাষের চেয়ে তুলনামূলক ভাবে টমেটো চাষে খরচ হয় দ্বিগুণের অধিক।কিন্তু বেড়িবাঁধ অরক্ষিত থাকায় প্রতিবছরই ক্ষতির বোঝাটাই জুটে তাঁদের কপালে।
কৃষকদের অভিযোগ”উপজেলা কৃষি অফিসের কৃষি কার্ড গুলো মুষ্টিমেয় কিছু প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি।কৃষি অফিসের লোকজনও শুধু স্থানীয় স্যার ও কীটনাশক ডিলারদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এসে বসে থাকে।মাঠ পর্যায়ে কোন মনিটরিং না করে কৃষি উন্নয়নের কথাই বলে যায় কিন্তু প্রকৃতপক্ষে কৃষক কারা তা মাঠ পর্যায়ে মনিটরিং করে যাচাই করা দরকার।আর সরকারি কৃষি সুবিধা গুলো প্রকৃত কৃষকদের অধিকার।কিন্তু কৃষি অফিসে থাকা লোকজন কৃষক পরিবার গুলোর কোনো খবরা-খবর রাখেনা বলে অভিযোগ কৃষকদের।

সরকার দেশের কৃষি খাতকে বাস্তবমূখি ও আধুনিক করতে নানান পদক্ষেপ নিলেও বাঁশখালী উপকূলীয় অঞ্চলের প্রকৃত কৃষি পরিবার গুলোর বেশিরভাগই সরকারি কৃষি সুবিধা থেকর বঞ্চিত।এমন তথ্য উঠে এসেছে উপকূলের কৃষি পরিবার থেকে।বিশেষ করে জলকদর খালের অধিকাংশ বেড়িবাঁধ অরক্ষিত থাকায় আমাবস্যা -পূর্ণিমার জোয়ারের পানিতে প্রতিনিয়ত তলিয়ে যায়।এরইমধ্যে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের তাণ্ডবে বেড়িবাঁধের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে লোনাপানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ায় উপকূলীয় অঞ্চলের কৃষি ও ক্ষেইত্যাল্যা পরিবার গুলো সহ স্থানীয় জনসাধারণ ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পড়লেও এখনো পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার গুলোর কোনো খোঁজ খবর নেননি কেউ।তাছাড়া সরকারি কৃষি সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত উপকূলের কৃষি পরিবার গুলো।

গণ্ডামারা ইউপির ৩ নং ওয়ার্ডের নুরুল কাদের, রশিদ আহমদ,আব্দুর রহিম বলেন তাঁরা স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে ধার ও স্বর্ণের দোকানি থেকে স্বর্ণ বন্ধক হিসেবে টাকা নিয়ে আগাম টমেটো ও শীতকালীন সবজি চাষ করেছি,কিন্তু টমেটো বিক্রির আগেই লোনাপানি ঢুকে সব ক্ষেতখোলা ধ্বংস হয়ে তাদের অন্তত ১৪/১৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।

একই ভাবে সরলের ২ নং ওয়ার্ডের সেলিম উল্লাহ ব্যুরো ব্যাংক থেকে ৩ লাখ টাকা, নুরুচ্ছফা কৃষি ব্যাংক থেকে ১ লাখ ও বুরো বাংলাদেশ থেকে ২ লাখ সহ তিন লাখ,আসহাব মিয়া কৃষি ব্যাংক থেকে ১ লাখ,আব্দুল কাদের বুরো বাংলাদেশ থেকে ২ লাখ,আব্দুল হাকিম ব্র্যাক থেকে ১ লাখ,মোঃ হোসেন বুরো থেকে ১ লাখ,আবুল হাসান ব্যাুরো থেকে ১ লাখ,মোঃ ছাবের ব্র্যাক থেকে ১লাখ সহ এই ভাবে লাখ লাখ টাকা সাপ্তাহিক ও মাসিক কিস্তি হিসেবে ঋণ গ্রহণ করে ধান ও টমেটো সহ আগাম সবজি চাষ করেন কৃষি পরিবার গুলো।উপকূলের বেড়িবাঁধ সিংহভাগ অরক্ষিত থাকার ফলে একদিক দিয়ে কৃষি পরিবারের”সোনার ফসল” সিত্রাং জ্বলোচ্ছাসে লোনাপানিতে নিমিষেই জ্বলছে গেছে আপরদিকে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে কিস্তি পরিশোধ করতে না পারায় ব্যাংক ও এনজিও সংস্থা গুলো ওইসব কিস্তির সাপ্তাহিক ও মাস শেষ না হতেই দরজার কড়া নাড়া দেয় কর্মকর্তারা।এই যেন তাঁদের করুণ অসহায়ত্ব।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে উপজেলা উপকূলীয় এলাকার পুইঁছড়ি,ছনুয়া, শেখেরখীল, চাম্বল,গণ্ডামারা, শীলকুপ,রত্নপুর,বাহারছড়া, কাথরিয়া,সাধনপুর,খানখানাবাদ ও পুকুরিয়া এলাকায় এ বছর ৩ হাজার হেক্টর জমিতে ধান ও শীতকালীন সবজি চাষ করেছে কৃষকরা। উপকূলীয় অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৮’শ হেক্টর প্লাবিত হয়েছে।
এই ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আবু ছালেক জানান,বাঁশখালী উপকূলে ৮’শ হেক্টর ফসলি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে সম্পূর্ণ  ক্ষতি হয়ে গেছে প্রায় ৩’শ হেক্টর।বেড়িবাঁধের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে যেহেতু ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে জোয়ারের পানি ঢুকেছে সেহেতু ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়তে পারে।ক্ষতিগ্রস্তদের সহয়তার জন্য অধিদপ্তর বরাবর রিপোর্ট লেখা হয়েছে।ব্রি থেকে লবন সহিষ্ণু জাতের ধানের বীজ চাওয়া হয়েছে যেন বোরো মৌসুমে আবাদ করতে পারে।তবে মঙ্গলবার ব্রি’র বিজ্ঞানীদের একটা টিম কে ভিজিট করেছি,মাটি ও পানি পরীক্ষা করে তাতে লবণের মাত্রা অনেক বেশি পাওয়া গেছে।ভারী বৃষ্টি কিংবা মিঠা পানির সেচ দিতে না পারলে বোরো আবাদও বিঘ্নিত হতে পারে।আর সেই জন্যে টেকসই বাঁধ নির্মাণের কোন বিকল্প নেই বলে জানান আবু ছালেক।
পানি উন্নয়ন বোর্ডর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী প্রকাশন চাকমা বলেন,বাঁশখালীর জলকদর খালের অরক্ষিত বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজ প্রক্রিয়াধীন।এ বিষয়ে আমাদের বড় একটি প্রকল্প নিশ্চিতে আছে।অনুমোদন পেলেই জলকদর খালের দু’পাড়ে সংস্কার কাজ করা হবে।কবে হতে পারে সেই কাজ?জানতে চাইলে তিনি বলেন,অনুমোদন ছাড়া”টেকসই মূলক” কাজ করাতো সম্ভব না।বড় ধরনের কাজ এই মূহুর্তে সম্ভব না।বরাদ্দ পেলেই জরুরি কাজগুলো দ্রুত সমাধান করা হবে বলে জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর
© All rights reserved © 2022 Dainik Sabuj Bangla
Theme Customized By Shakil IT Park