মোঃ জাবেদুল ইসলাম
সেই ছোট বেলার থেকে লোডশেডিং আমাদের জীবনের একটা অংশ। তবে সাম্প্রতিক লোডশেডিং ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।যে কোন কারণ ছাড়া চলতে ৩০ - ৫০ বার পর্যন্ত লোডশেডিং। কখনো বা দীর্ঘ লোডশেডিং আবার কখনো হালকা লোডশেডিং। ঘন ঘন লোডশেডিং প্যারা ভোগান্তিরতে সকল শ্রেণি মানুষ।কর্মক্ষেতে দেখা দিচ্ছে না দিক সমস্যা।
সারোয়ার একজন এসএসসি পরীক্ষার্থী।সন্ধ্যা সময় পড়ার টেবিলের বসার কথা থাকলে এখন ব্যস্ত হয়ে পড়ে মোবাইল অনলাইনের গেইজ আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।সারোয়ার এমন কান্ডে সন্তানের ভবিষ্যৎ দু'চিন্তা পিতা-মাতা। সারোয়ার লেখকের জানান, লোডশেডিং প্যারা কারণে পড়তে বসতে মন চাই না। সন্ধ্যায় পড়ার সময় বিদ্যুৎ চলে যায়। হঠাৎ কয়েকদিন যাবৎ খুব গরম পড়তেছে। বিদ্যুৎ চলে গেলে গরম জন্য পড়ার টেবিলের বসা খুব কষ্টকর।যদি পড়ার টেবিল থেকে একবার মনোযোগ ওঠে যায়।তখন আর পড়ার টেবিলের বসতে মন বসে না।তাই মোবাইল নিয়ে একটু সময় কাটাচ্ছি।
আব্দুল একজন পেশাদার দর্জি। দরিদ্রতার জন্য একটা দর্জি ফ্যাশনের দোকানের কাজ করে দীর্ঘ ৪ বছর।ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে আগে মতো কাজ করতে পারতেছে।এতো বেশি লোডশেডিং যেই বলার বাহিরে একবার লোডশেডিং সময় আধা - একঘন্টা বা এর বেশি সময় ধরে চলতেছে দীর্ঘ লোডশেডিং। আব্দুল নিজের আয়, ব্যয় আর জীবিকা নির্বাহ নিয়ে দুচিন্তা ভোগ করতেছে।
ঘন ঘন লোডশেডিং জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করতেছে সাধারণত জনগণ।সকাল, দুপুর, বিকাল, সন্ধ্যা, রাত, মধ্য রাত বাদ যাচ্ছে লোডশেডিং বেপরোয়া কান্ড।
অর্থনৈতিক সংকট এড়াতে মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) থেকে প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তবে কোন এলাকায় কখন লোডশেডিং তা আগেই জানিয়ে দেওয়া হবে।
সোমবার (১৮ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জ্বালানি বিষয়ক এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে প্রতিদিন ২ ঘন্টা লোডশেডিং হবে।তবে লোডশেডিং কোথাও টানা দুই ঘণ্টা করা হবে না। দিনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আধঘণ্টা করে সব মিলিয়ে দুই ঘণ্টা করা হতে পারে।’
জানা গেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দরের ঊর্ধ্বগতি ও প্রাপ্যতা সংকটের মধ্যে সরকার ঘোষণা দিয়ে লোডশেডিং শুরু করেছে। পাশাপাশি জ্বালানি সাশ্রয়ে নানা ধরনের কৌশল গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে আছে রাত ৮টার মধ্যে দোকান বন্ধ, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের ব্যবহার সীমিত করা, পাশাপাশি তাপমাত্রা ২৫-এর নিচে না নামানো।
বিদ্যুৎ অপচয় রোধ করার মাধ্যমে লোডশেডিং কমা সম্ভব। প্রতিটি মুহূর্তের অপচয় হচ্ছে বিদ্যুৎ। বাসাবাড়িতে অযথা বাতি জ্বালিয়ে রাখা বন্ধ করতে হবে। প্রয়োজনের বাহির বিদ্যুৎতের পাখা বন্ধ রাখতে হবে।প্রয়োজন ছাড়া এসি চালু রাখা বন্ধ করতে হবে। আমাদের দায়িত্ব বিদ্যুৎতের যথাযথ ব্যবহার করা।বিদ্যুৎ অব্যবহার রোধে সবাইকে সচেতনতা সৃষ্টি করা।আসুন আমরা সবাই মিলে বিদ্যুৎ অপচয় রোধ করি। লোডশেডিং প্যারা থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করি।
মোঃ জাবেদুল ইসলাম
গণমাধ্যমকর্মী ও সমাজসেবী সংগঠক
বিএ- সরকারি সিটি কলেজ