দিদার হোসাইন,স্টাফ রিপোর্টারঃ
চট্টগ্রামের বাঁশখালীর চাম্বল ইউপি নির্বাচনে দ্বিতীয় বারের মতো চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হাসি পেলেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত নৌকা প্রার্থী মুজিবুল,হেরেছে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ফজলুল।
নানান কল্পনা-জল্পনা শেষে ১২ অক্টোবর(বুধবার) সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত কোনো প্রকার সংঘাত বিহীন ভাবে শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণ সম্পন্ন করা হয়।ভোট শেষে উপজেলা নির্বার্চন কার্যালয় থেকে বেসরকারি ভাবে ফলাফল ঘোষণা করা হয়।নির্বাচন কার্যালয় থেকে ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায় দ্বিতীয় বারের মতো নৌকা প্রতীক নিয়ে ৯ হাজার২৯২ ভোট পেয়ে জিতে গেলেন আলহাজ্ব মুজিবুর হক চৌধুরী।অপরদিকে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ফজলুল কাদের (আনারস) প্রতীকে পেয়েছেন ৫ হাজার ৭১৬ ভোট,মোহাম্মদ এরশাদুর রহমান(মোটরসাইকেল) প্রতীকে পেয়েছেন ১৩২ ভোট,শাহেদা বেগম নূরী(চশমা প্রতীকে)পেয়েছেন প্রতীকে ৬৬ ভোট।বাঁশখালীর অন্যান্য ইউপির ন্যায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)'র ঘোষণা অনুযায়ী গত ১৫ জুন চাম্বল ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলে সরকার সমর্থিত নৌকা প্রতীক মুজিবুল হক চৌধুরী (ইভিএম) নিয়ে নিয়মবহির্ভূত বক্তব্য দেয়ার ভিডিও ফুটেজ বিভিন্ন ফেইসবুক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া নানান আলোচনা সমালোচনার মুখে পড়ে মুজিবুল,এই নিয়ে কয়েক ধাপে পিছে যায় নির্বাচন।অবশেষে বুধবার ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।এতে দ্বিতীয় বারের মতো আবারও নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হন মুজিবুল হক চৌধুরী।এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করলেও শুরু থেকেই মুজিবুল হক চৌধুরী(নৌকা) ও ফজলুল কাদের (আনারস)'র প্রচার-প্রচারণা ছিলো উৎসব মূখর।
এই নির্বাচন নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে শঙ্কাসহ ভয়ভীতি থাকলেও সকল প্রকার শঙ্কার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে শান্তি পূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে ভোট গ্রহণ।নির্বাচনে সহিংসতা ও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এবং স্বচ্ছ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি,ডিবি পুলিশ সহ প্রশাসনের অবস্থান ছিলো চোখে পড়ার মতো।
বাঁশখালী থানা অফিসার ইনচার্জ চৌকস (ওসি) মুহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন,নির্বাচনকে ঘিরে সকল প্রকার সংহিতা ও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ও শান্তি পূর্ণ পরিবেশে সাধারণ ভোটাররা যাতে তাঁদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোটদিতে পারে সেই লক্ষে আমি- আমার পুলিশ সদস্যদের নিয়ে দৃঢ় অবস্থানে ছিলাম।কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া নির্বাচন সম্পন্ন করতে পেরেছি এটাই আল্লাহর কাছে শুকরিয়া।
এতে সাধারণ ইউপি সদস্য হিসেবে ১ নং ওয়ার্ডে টানা ৫ম বারের মতো ফুটবল প্রতীকে ১০৭৯ পেয়ে মোহাম্মদ শহীদ উল্লাহ বিজয়ী হন,২ নং ওয়ার্ডে মোক্তার আহমদ টিউবওয়েল প্রতীকে ৫৩৩ ভোট পেয়ে, ৩নংওয়ার্ডে ফজল কাদের ফুটবল প্রতীকে ৮২৯ ভোট পেয়ে,৪ নং ওয়ার্ডে আহমদ কবির মোরগ প্রতীকে ১০২১ ভোট পেয়ে, ৫নং ওয়ার্ডে নুরুল হোছাইন টিউবওয়েল প্রতীকে ৪৩০ ভোট পেয়ে,৬নং ওয়ার্ডের জসিম উদ্দিন সিকদার ফুটবল প্রতীকে ৩৯১ ভোট পেয়ে,৭ নং ওয়ার্ডে রহমত উল্লাহ ফুটবল প্রতীকে ৬৯২ ভোট পেয়ে,৮ নং ওয়ার্ডে মোহাম্মদ ইয়াছিন চৌধুরী ফুটবল প্রতীকে ৪৫২ ভোট পেয়ে এবং ৯ নং ওয়ার্ডে সোহেল ইকবাল চৌধুরী মোরগ প্রতীকে ১৪৪৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন।
এছাড়াও সংরক্ষিত ১,২,৩ নং ওয়ার্ডে মোছাম্মৎ হীরা মনি সূর্যমূখি ফুল প্রতীকে ২৮০৪ ভোট পেয়ে, ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডে ফাতেমা বেগম বই প্রতীকে ২২৫৯ ভোট পেয়ে এবং ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডে সুলতানা নার্গিস হেলিকপ্টার প্রতীকে ২৩০৭ ভোট পেয়ে সংরক্ষিত মহিলা সদস্যা হিসেবে বিজয়ী হন।
ফলাফল ঘোষণাকালে উপস্থিত ছিলেন,উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হারুন মোল্লা,নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা রকর চাকমা,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাঈদুজ্জমান চৌধুরী,বাঁশখালী থানা অফিসার ইনচার্জ চৌকস (ওসি) মুহাম্মদ কামাল উদ্দিন প্রমূখ।
উল্লেখ্য,চাম্বল ইউপির নারী-পুরুষ ঐক্যবদ্ধ ভাবে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে মুজিবুল হক চৌধুরীকে টানা দ্বিতীয় বারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত করায় চাম্বলের সর্বস্তরের জনসাধারণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মুজিবুল হক চৌধুরী।