হাম্মদ দিদার হোসাইনঃ
বাঁশখালীতে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে বেধড়ক মারধর করার একপর্যায়ে মোঃ ওসমান (২০) নামে এক লোক নিহতের ঘটনা ঘটেছে, এঘটনায় নিহতের বড় ভাই মানিকসহ দুইজনকে তৎক্ষনাৎ গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ।
সোমবার (১১ নভেম্বর) রাত আনুমানিক সাড়ে ৮ টার দিকে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার ৭ নং সরল ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড রঞ্জু বাপের বাড়ী এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে। নিহত মোঃ ওসমান (২০) ওই এলাকার মোঃ হারুন এর পুত্র।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলোঃ নিহতের বড় ভাই মোঃ রিদওয়ানুল হক (মানিক), অপরজন একই এলাকার মৃত হারুন রশীদের পুত্র মোঃ মাহমুদুল্লাহ। ঘটনার পরপরই বাঁশখালী থানা অফিসার ইনচার্জ ওসি সাইফুল ইসলামের নির্দেশনায় থানা পুলিশ এসআই দয়াল চন্দ্র ভৌমিকসহ সঙ্গীয় পুলিশ সদস্যরা তৎক্ষনাৎ অভিযান চালিয়ে এই দুই আসামীকে গ্রেফতার করে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ পূর্বে মোঃ ওসমান নামে এই ছেলেটির চাচা শহিদুল ইসলামের বসতঘর থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরির ঘটনা ঘটে, সন্দেহজনক কারণে ওসমানকে ধরে নিয়ে যায় এবং মারধরের একপর্যায়ে একই এলাকার আলমগীর নামের এক লোকের কাছে চোলাইকৃত স্বর্ণ ও টাকা সংরক্ষিত রেখেছে মর্মে স্বীকার করে ওসমান। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় সেখান থেকে চোরাইকৃত স্বর্ণ ও টাকা উদ্ধার করা হয়।
তবে চুরির সাথে সম্পৃক্ত চোর চক্রের আরও কয়েকজনের নাম বলাতেই সংক্ষুব্ধ হয়ে অপরাপর চোর চক্রসহ ওসমানকে বেধড়ক মারধর শুরু করে, এসময় অপমান সহ্য করতে না পারায় তাদের হাত থেকে ভাইকে রক্ষা করতে ও বেধড়ক মারধর থেকে বাঁচতে তার ভাই মানিক তাকে চড়থাপ্পড় মেরে নিয়ে যেতে চাইলেও ৪/৫ জন যুবক তাকে মারধর করাতে মাটিতে লুটে পড়ে ওসমান, পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে।
নিহতের মা রাবেয়া বেগম বলেন, আমার ছেলেকে কে বা কারা মারধর করছে সেটা জানিনা, তবে চুরি সন্দেহে মারধর করেছে বলে জানতে পেরেছি, মারধর করে মোঃ ওসমানকে রাতের আঁধারে বাড়ির পার্শ্ববর্তী ফেলে যায়, দেখতে পেয়ে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে আমি ও আমার ছেলে মোঃ মানিকসহ হাসপাতালে নিয়ে আসি। সেখানে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেছে। এসময় নিহতের মা রাবেয়া আরও বলেন, আমার একজন ছেলেকে মেরে ফেলেছে আরেক ছেলে মোঃ মানিককে পুলিশ গ্রেফতার করে ফেলেছে।
তবে পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, চুরির ঘটনার পর চোলাইকৃত স্বর্ণ ও টাকার বিষয়টি স্বীকার করাতে শহীদুল ইসলাম এবং রেদোয়ানুল হক মানিকসহ ভিকটিম ওসমান গণীকে মারধর করে, এসময় তাকে কাঠের হাতুড়ি ও ইট দিয়ে আঘাত করা হয়, আলমগীর ও মাহমুদুল্লাহ কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে, এতে একপর্যায়ে ভিকটিম ওসমান গণী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়, সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। এখুনের মামলায় দুই আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান বাঁশখালী থানা সেকেন্ড অফিসার এসআই কামরুল হাসান কায়কোবাদ।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বাঁশখালী থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়, নিহতের লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এ হত্যা মামলার দুই আসামীকে তৎক্ষনাৎ গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
Leave a Reply