দিদার হোসাইন,স্টাফ রিপোর্টারঃ
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে পুলিশ-বিএনপির ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান ও সদস্য সচিব মোস্তাক আহমেদ সহ ৬৬ জন জ্ঞাত সহ ৪ শতাধিক নেতা কর্মীকে অজ্ঞাত আসামি করে পুলিশের ৩ মামলা।আটক ৬ জন।
আটকরা হলো, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা মহিলা দল সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জান্নাতুল নাঈম রিকু,চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা মহিলা দল সহ সম্পাদক ও বাঁশখালী পৌরসভা মহিলা দল সভাপতি শারাবান তহুরা কলি,বিএনপি কর্মী দেলোয়ার, মোহাম্মদ পারভেজ, মোহাম্মদ এমরান ও মোহাম্মদ জুবায়ের।
দেশজুড়ে জ্বালানী ও তেলের মূল্য বৃদ্ধি ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যেমূল্যের উর্ধগতি এবং ভোলায় ছাত্রদল সভাপতি নুরে আলম ও সেচ্ছাসেবক দল নেতা আব্দুর রহিম হত্যার প্রতিবাদে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী দেশব্যাপী প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভের পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী বাস ভবনে শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশ শেষে বিএনপির নেতা কর্মীরা সমাবেশ স্থল থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপজেলার কালীপুরের ভাসাইন্নার দোকান হয়ে প্রধান সড়কের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের বাঁধা দেয়।এতে বিএনপির নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এতে সহকারী পুলিশ সুপার আনোয়ারা (সার্কেল) মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির ও বাঁশখালী থানা অফিসার ইনচার্জ ওসি মুহাম্মদ কামাল উদ্দিন সহ ১৫ জন পুলিশ সদস আহত হয়।অপরদিকে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদল নেতা শহীদুল ইসলাম সহ অন্তত ৩৫/৪০ জন বিএনপি নেতা কর্মী আহত হয়েছে বলে জানান গেছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্যদর্শী সুত্রে জানা যায়,বিএনপির নেতা কর্মীরা তাদের বিক্ষোভ মিছিল থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে অকথ্য ভাষায় গালি-মন্দ সহ অতর্কিত ভাবে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে,এতে সহকারী পুলিশ সুপার আনোয়ারা সার্কেল হুমায়ুন কবির ও বাঁশখালী থানা অফিসার ইনচার্জ ওসি কামাল উদ্দিন,তদন্ত ওসি এস এম আরিফুর রহমান,এস আই নজরুল,এস আই বাবুল,এএস আই নজরুল ইসলাম,কনস্টেবল জাবেদুল ইসলাম সহ অন্তত ১৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে।
অপরদিকে বিএনপির দাবি,সমাবেশ শেষে নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রধান সড়কের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ অতর্কিত হামলা চালায়,এতে পুলিশ ও বিএনপি নেতা কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।এতে ৩৫-৪০ জন নেতা কর্মী আহত হয়। আহত ৬ জনের অবস্থা আশংকাজনক বলে বিএনপির দাবি।
আহত নেতাকর্মীরা হলেন, বিএনপি নেতা ও ইউপি সদস্য গিয়াস উদ্দিন লুট্টু, দক্ষিণ জেলা ছাত্র দল নেতা শহিদুল ইসলাম,বিএনপি নেতা আব্দুল ওহাব চৌধুরী, বিএনপি নেতা দিল মোহাম্মদ,শহিদুল্লাহ, ওসমান গণী, আবু ছালেক, শাহাদাত হোসেন,সুজন,নাছির উদ্দিন, ইব্রাহিম, আব্দুর রহিম ও নেজাম উদ্দিন সহ ৩৫/৪০ জন আহত হয়েছে বলে জানা যায়।তাছাড়া রাতে মহিলা দল নেত্রী রিকু ও কলি সহ ৫ জন নেতা কর্মীকে পুলিশ আটক করে নিয়ে গেছে বলে দাবি করেন বিএনপি।
এই ঘটনায় বাঁশখালী থানায় আসামি করে তিনটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।এতে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাফরুল ইসলাম,চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান ও সদস্য সচিব মোস্তাক আহমেদ সহ ৬৬ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক ৪ শতাধিক নেতা কর্মীকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
এব্যাপারে বাঁশখালী থানা পুলিশ পরিদর্শক এস এম আরিফুর রহমান বলেন,বিএনপি নেতা- কর্মীরা শুক্রবার তাদের সমাবেশ শেষে লাঠি-সোঁটা নিয়ে মিছিল সহকারে প্রধান সড়কে এসে গাড়ি ভাংচুর ও যান চলাচলে বাঁধা সৃষ্টির করতে চেয়েছিল।এতে পুলিশ তাদের বাঁধা দিলে নেতা কর্মীরা পুলিশের উপর ইটপাটকেল ও লাঠি-সোঁটা নিয়ে অতর্কিত হামলা করেছে।সরকারি কাজে বাঁধা, ককটেল বিস্ফোরণ, জন চলাচলে বাঁধার অভিযোগে ৩টি মামলা করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের ভিডিও ফুটেজ দেখে এই পর্যন্ত ৬৬ জনের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে।