মুহাম্মদ দিদার হোসাইন, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম।
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বেড়েছে ডায়রিয়া ও জ্বরের প্রকোপ, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে বাড়ছে ডায়রিয়া ও জ্বরাক্রান্ত রোগীর চাপ।উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতাল সুত্রে
জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে প্রতিনিয়তই ছুটে আসছে ডায়রিয়া এবং জ্বরাক্রান্ত রোগী, এতে হাসপাতালে দিনদিন বাড়ছে রোগীর চাপ।তবে ওইসব রোগীদের দিন-রাত চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা।
এরই মধ্যে ২৫ জুন মঙ্গলবারের সকাল থেকে বিকেল সাড়ে ৫ টা পর্যন্ত হিসেব অনুযায়ী দেখা যায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ৫৪ জন রোগী ইনডোরে ভর্তি রয়েছে, তন্মধ্যে বেশির ভাগ রোগীই ডায়রিয়া ও জ্বরাক্রান্ত রোগী। ওইসব রোগীদের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন বয়সের নারী -পুরুষ। আর জ্বর ও নিউমোনিয়া আক্রান্তদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু।
সরেজমিনে হাসপাতালে পরিদর্শনে দেখা যায়, উপজেলার সরল ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের একই পরিবারের ৩ সদস্য ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছেন। তারা হলেন,সরল ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের আনোয়ারুজ্জামান এর ছেলে হাফেজ আব্দুল হালিম, হাফেজ আব্দুল আলিম ও হাফেজ আব্দুল মাজেদ। সবাই অসুস্থ হয়ে পড়ায় পরিবারে তাদের দেখারও কেউ নেই।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের তথ্যানুযায়ী এরই মধ্যে অনেক রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন, তবে
২৫ জুন বিকেল সাড়ে ৫ টা পর্যন্ত ৫৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি দেখা গেছে। রাতে রোগীর চাপ আরো বেড়ে যায় হাসপাতালে। প্রতিনিয়ত জরুরি বিভাগে ভিড় জমাচ্ছে রোগীরা। ভর্তি থাকা রোগীদের বেশির ভাগই ডায়রিয়া , জ্বর ও নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত। রোগীরা শারীরিক ভাবে যখন একে বারেই ভেঙে পড়ে তখনই হাসপাতালে আসে, বিশেষ করে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের শরীর খুব কম সময়ের মধ্যে পানি শূন্য হয়ে পড়ে, তাই রোগীরা দ্রুতগতিতে শারীরিক ভাবে ভেঙে পড়ে, এমবস্থায় দ্রুততম সময়ে পানি শূন্যতা দূর করতে হয়। পরিমিত পরিমাণে খাবার স্যালাইন খাওয়াইতে হয়। আর ডায়রিয়া আক্রান্ত হওয়ার সাথে সাথেই কোনো ধরনের অবহেলা না করে রোগীরা যেনো চিকিৎসকের স্মরনাপন্ন হয়।
গ্রাম-গঞ্জের মানুষের মধ্যে এখনো পর্যন্ত সচেতনতার অভাব রয়েছে, ডায়রিয়া ও জ্বরে আক্রান্ত হলে রোগীদের নিয়ে ঘরে বসে থাকে, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই নিজ ইচ্ছে মতো ফার্মেসী থেকে ঔষধ কিনে খায়, রোগীর অবস্থা যখন ঝুঁকিপূর্ণ হয় তখন রোগীদের নিয়ে হাসপাতালে আসে। চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত ঔষধ সেবন এমনিতই স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ায়। তবুও মানুষ এটা বুঝতে চেষ্টা করেনা। আর স্বভাবত বিশুদ্ধ পানি পান না করা, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার না খাওয়া, সঠিক ভাবে ব্যক্তিগত এবং পরিবেশগত স্বাস্থ্য বিধি মেনে না চলা ও প্রচন্ড গরমের কারণে ডায়রিয়া সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকে।
প্রচন্ড গরমে এমনিতেই জনজীবন অস্থির, এরই মধ্যে ডায়রিয়া ও জ্বরাক্রান্ত রোগের প্রকোপ বেড়েই চলেছে। বিগত বছরের চেয়ে এবছর তীব্র তাপদাহের কারণে ডায়রিয়া ও জ্বরাক্রান্ত রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, শুধুই যে ঠান্ডার মৌসুমে বাচ্চাদের জ্বর ও নিউমোনিয়া হয় তা নয় বরং অতিরিক্ত গরমের কারণেও জ্বর ও নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডায়রিয়া রোগীদের মধ্যে বেশির ভাগ রোগী মাঝারি ও ৪০ উর্ধ্বে বয়সের নারী-পুরুষ, শিশুও রয়েছে, তবে বিগত বছরের তুলনায় এবছর শিশু ছাড়াও মাঝারি বয়সের রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কতৃপক্ষ। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতাল ছাড়াও বাঁশখালীর বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ডায়রিয়া ও জ্বরাক্রান্ত রোগীদের ভিড় দেখা গেছে।
(ছবিঃ ক্যাপশনঃ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বাঁশখালী)
Leave a Reply