মোঃ জাবেদুল ইসলামঃ-
তারপর এক এক করে সবাই আমার চারপাশে ঘিরে ধরলো – আমি সবার পা ধরছি শুধু মাত্র আমাকে ছেড়ে দেওয়া জন্য। আমার অপেক্ষা পথ চেয়ে আছে মা এবং ছোট বোনরা। প্লীজ,প্লীজ, প্লীজ,আমার প্রতি একটু দয়া করুন। আমি শারীরিক ভাবে অসুস্থ। আমার পিরিয়ড হচ্ছে আপনারা আমার প্রতি একটু দয়া করুন। আমি তো আপনাদের কোন ক্ষতি করি নাই। আমার এতো বড়ো ক্ষতি করবে না। আমি মায়ের কাছে যাবো। কান্নার আওয়াজে চারপাশের আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে আসছে। কিন্তু পাষাণ, হিংস্র জানোয়ার গুলোর হৃদয় একটু গলেনি।একে একে শরীরের সব কাপড়-ছোপড় ছিঁড়ে পেললো।
আমার দু’চোখ থেকে অবিরাম অশ্রু ঝরতে লাগলো। আমি নিরুপায়, সবাই পালাক্রমে সারারাত ধরেই আমাকে ধর্ষণ করতে লাগলো। ধর্ষকদের নির্যাতনের আমার পুরো শরীর ক্ষত-বিক্ষত হয়ে গেছে। সন্ধ্যা থেকে মায়ের মোবাইল থেকে বিরতিহীন কল আসতেছে। হিংস্র জানোয়ার গুলো আমার মোবাইল, টাকা-পয়সা সব নিয়ে নিয়েছে। সারারাত ধর্ষণের শিকার হাওয়া পর আমার ক্ষত দেহ মাটিতে পড়ে আছে। আমার মুখে কথা বলা শক্তিটুকুও শেষ করে দিল ধর্ষককারী জানোয়ার গুলো।
চারিদিকে ফজরের আযান হচ্ছে এমন সময় তারা আমাকে আগের সেই সিএনজি অটোরিকশা যোগে বাড়ি সামনে পেলে দিল। গাড়ির শব্দ শুনে মা আর ছোট বোনরা দৌড়ে এসে আমাকে দেখে হতবাক হয়ে গেল! আমি মাটির মেঝেতে পড়ে আছি। আম্মু আর আমার ছোট্ট বোনরা সবাই এগিয়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগলো।একটু পর আমাকে বাসা নিয়ে যায়। আমার শারীরিক অসুস্থতা জন্য আমার শরীর থেকে প্রচুর রক্ত ক্ষরণ হয়েছে। ইতি মধ্যে আমার ধর্ষণের কথা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে।
আম্মু আমাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেল- চিকিৎসক ধর্ষণের কারণে জানতে চাইলো? হতবাগা পিতা খবর পেল ধর্ষকরা শারমিনকে ধর্ষণ করে পেলে দিয়েছে। আদরের বড় মেয়ের ধর্ষণের কথা শুনে পিতা মাথা যেন ৭ আসমান ভেঙ্গে পড়লো!
অসহায় পিতা চাকুরি ছেড়ে পাগলের মতো এক দৌড়ে হাসপাতালে, এক দৌড়ে থানা ছুটোছুটি করতে লাগলো। শারমিন পুলিশের কাছে গেল ধর্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করানোর জন্য, ধর্ষকদের নাম গুলো কর্তব্যরত পুলিশ অভিযোগ না নিতে নানান কান্ড বসালো।কারণ পুলিশ জানে যে ধর্ষকদের সিন্ডিকেটদের হাত অনেক লম্বা। স্থানীয় নেতাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে দিন দিন ধর্ষকরা বেপরোয়া হয়েছে ওঠেছে।
কিন্তু পুলিশ তো প্রমাণ ছাড়া কিছুই করতে পারবে না। তাকে প্রমাণ দিতে হবে সে আসলে ধর্ষিতা নারী কিনা! পুলিশ কর্মকর্তা ধর্ষণের বিবরণ জানতে চাইলো – কে,কখন,কোথায়,কিভাবে, কয়জন করছে, ইত্যাদি । নাকি আপনি ধর্ষণের অপবাদ দিয়ে হয়রানি করতেছেন? তারপর লজ্জিত অনুভবে শারমিন চোহারাটা নিচে করে রাখলো।নিজের জন্মদাতা পিতার সামনে পুলিশ আমার ধর্ষণের বিবরণ জানতে চাইতেছে। পুলিশ কর্মকর্তা ধমক দিল এতে লজ্জার কি আছে – করার সময় মনে ছিল না। আপনাদের প্রতি এতো সময় নষ্ট করতে পারবো না।এই বলে পুলিশ কর্মকর্তা রেগে গেল – শারমিন দু’চক্ষু থেকে বৃষ্টি মতো অশ্রু গড়িয়ে পড়ে আর ধর্ষণের ভয়াবহ বর্ণনা দেওয়া সময়।
Leave a Reply