নিজস্ব প্রতিবেদকঃঃ
আনোয়ারায় সম্প্রতি চোরের উপদ্রব মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিনই গবাদিপশু, মন্দিরের সোনা অলংকার, দান বক্সের টাকা চুরি,মোটরসাইকেল চুরি, দোকানের মালামাল,মসজিদের পানির মোটর চুরি, পোল্ট্রি খামারের মালামাল চুরি।ইতোপূর্বে বেশ কিছু চুরি সংঘটিত হলেও কোন চোরকে গ্রেফতার করতে পারিনি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। ফলে উপজেলা জুড়ে আতংক বিরাজসহ চুরি বৃদ্ধি পেয়েছে।
গত ১ লা অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) দিবাগত রাতে বৈরাগ ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মোহাম্মদ উল্লাহ – পাড়া গ্রামে আবদুল রাজ্জাক সওদাগরের একটি গাভি গরু চুরি হয়ে যায়। ২ অক্টোবর (রবিবার) পশ্চিমচাল ২ নং ওয়ার্ড থেকে মো. বাদশা এবং হুমায়ুন কবির নামে ২ ব্যক্তি ৪ টি গরু পিকাপ করে চোরে নিয়ে যায়।৪ অক্টোবর ( মঙ্গলবার) সাংবাদিক মহিউদ্দিন মনজুর মোটর সাইকেল চুরি করে নিয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) উপজেলা সদরে অনিশা জুয়েলার্স দোকানের ৪টি তালা কেটে ভেতরে প্রবেশ করে ১০ হাজার টাকার গোল্ড প্লেট চুরি। একই রাতে আইটি জোনের দোকানের তালা কেটে লক্ষাধিক টাকার ১৬ টি মোবাইল ও একটি ল্যাপটপ নিয়ে গেছে। ঘটনার সময় দুইটি সিসি টিভি ক্যামেরা অচল করে দেয়।
সোমবার (৪ জুলাই) উপজেলার ১০ নং হাইলধর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ইউসুফ আলী মেম্বারের বাড়ির মোহাম্মদ আনোয়ারের ৩ টি, একই ইউনিয়নের ঐ এলাকার মোঃ জাহাঙ্গীরের ২ টি ও আনোয়ারা সদর ইউনিয়নের বিলপুর ৯নং ওয়ার্ডের সোলাইমানের নতুন বাড়িতে মোহাম্মদ রফিক উদ্দিনের ১টি গরু নিয়ে যায় চোরেরা।
২২ শে জুলাই জুমার নামাজ চলা অবস্থায় পূর্ব বৈরাগ খোসাল তালুকদার জামে মসজিদের থেকে বৈরাগ ৮ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য এম এ রহিমের মোটরসাইকেল চুরি। ১৫ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাতে উপজেলার ৮নং চাতরী ইউনিয়নের কেয়াগড় গ্রামের কেয়াগড় সার্বজনীন শ্রী শ্রী মগদেশ্বরী ও শিব মন্দিরে দান বাক্সের আনুমানিক নগদ ৫০ হাজার টাকা, স্বর্ণালঙ্কার এবং কাশা, ঘণ্টা, শঙ্খসহ মন্দিরের অনেক মূল্যবান আসবাবপত্র।
আনোয়ারা সদর ইউনিয়নের ধানপুরা এলাকায় কালি মন্দির ও শীতলা মন্দিরের পিতলের কলস, পিতলের করাই, শিব লিঙ্গ, খাসা, পিতলের ঘন্টা, পিতলের দূর্গা মুর্তি, তামার খাসা ও তামার খুপি চুরি।হাইলধর ইউনিয়নের গুজরা গ্রামের একটি মন্দির থেকে দেড়শ বছরের পুরোনো নয়টি পিতলের মূর্তি চুরি। ৩০ জুন ২০২১ ইং (বুধবার) দিবাগত রাতে দক্ষিণ শোলকাটা গ্রামের শ্রী শ্রী লোকনাথ মন্দিরের দরজা ভেংগে দান বাক্সের টাকা, মন্দিরের সামনে থাকা বড় ঘন্টা সহ মন্দিরের পূজার সকল প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র চুরি।
স্থানীদের অভিযোগ জনগনের সুবিধা জন্য উপজেলা গুরুত্বপূর্ণ স্থানের সড়কগুলো সিসিটিভি আওতায় আনলে চুরিসহ সকল ধরনের অপরাধ দমন করা সম্ভব হবে। স্থানীয়রা আরো জানান, কিছু এলাকায় মাদক সেবনকারীরা। তাদের নেশা টাকা জোগাড়তে চুর চক্র সাথে জড়িত থাকতে পারে।স্থানীয়রা চুরে হাত থেকে রক্ষা পেতে জনপ্রতিনিধি এবং উপজেলা প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়,গভীর রাতে গোয়াল ঘর থেকে গরু চুরি করে নম্বরবিহীন ট্রাক, পিকাপ, সিএনজিতে উঠিয়ে নিয়ে যায় চোরেরা। আর এসব ঘটনায় খুব কম সংখ্যক মামলাই রেকর্ডভুক্ত হয়। অনেক ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্তরা প্রতিকার পাবেন না এ আশংকা বা পুলিশি হয়রানির ভয়ে থানায় অভিযোগও দেন না। ফলে চোরের দল পার পেয়ে যাচ্ছে নির্বিঘ্নে। পুলিশের নজরদারির অভাব আর রাত্রিকালীন টহল না থাকার কারণে চুরি ঠেকানো যাচ্ছে না বলে অনেকের অভিযোগ। সংঘবদ্ধ চোরের দল নানা কৌশলে চুরি করে যাচ্ছে।
ভুক্তভোগী আবদুল রাজ্জাক জানান,‘গরু চুরি হয়ে যাওয়া পর অনেক খোঁজাখুঁজি করছি। কোথাও পাইনি। পুলিশ চিরুণি অভিযানে নামুক। চোরের চক্রের দল ধরপাকড় শুরু করুক। তাহলে আমাদের মতো হত দরিদ্র চোরের হাত থেকে রক্ষা পাবে।
ভুক্তভোগী হুমায়ুন কবির জানান,আমার ২টি গরু আনুমানিক রাত ১২- ২ টায় পিকাপ গাড়ি করে চোরে নিয়ে যায়। আমি সিসিটিভি ক্যামেরায়।সেই ফুটেজ নিয়ে থানায় অভিযোগ করতে গেলে এসআই মো. হাসান অভিযোগ নেইনি। তিনিজানান চুরে নাম ছাড়া কোন অভিযোগ নেওয়া হবে না।
আনোয়ারা থানার ওসি (তদন্ত) আবদুল রহিম সরকার কাছে ভুক্তভোগী গরু মালিক মোঃ হুমায়ুন কবির সিসিটিভি ক্যামেরায় ফুটেজ নিয়ে থানা অভিযোগ করতে গেলে এসআই মো. হাসান অভিযোগ গ্রহণ করে। এই বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে ওসি তদন্ত জানান, ভুক্তভোগীদের আমাদের কাছে পাঠিয়ে দেন। আমরা অভিযোগ নিয়ে নিব। দেখি কি করতে পারি।
Leave a Reply